দীর্ঘ যাত্রা শেষে চাঁদে পৌঁছালো যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের মহাকাশযান। বেসরকারিভাবে সফল চন্দ্রাভিযানের দ্বিতীয় ঘটনা এটি। রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সময় রাত তিনটা বেজে ৩৪ মিনিটে ফায়ারফ্লাই এয়ারস্পেসের যানটি চাঁদে নামে। এই অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে ব্লু ঘোস্ট মিশন ১।এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইনটুইটিভ নামের একটি প্রতিষ্ঠান প্রথমবারের মতো বেসরকারিভাবে চাঁদে যান পাঠায়। তবে চাঁদে পৌঁছানোর পরপরই সেটি ভেঙে পড়ে।
ফায়ারফ্লাই এয়ারস্পেসের প্রধান নির্বাহী জ্যাসন কিম ব্লু ঘোস্ট মিশনের সফল অবতরণের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সেই সঙ্গে মহাকাশযানটি অক্ষত ও ঠিকভাবে নামতে পেরেছে বলেও জানিয়েছেন।
ব্লু ঘোস্টের প্রকল্প ব্যবস্থাপক রে অ্যালেন্সওর্থ জানিয়েছেন, যানটি তাদের লক্ষ্যস্থলের ১০০ মিটারের মধ্যে অবতরণ করতে সক্ষম হয়েছে।অ্যাপোলো-১১ এর পর চাঁদে আবারও মহাকাশচারী নিয়ে যাওয়ার অভিযান আর্টেমিস মিশনের খরচ যোগাতে এই উদ্যোগ নেয় নাসা। নাসার পরিচালক জ্যানেট পেট্রো বলেন, ‘আমরা আমেরিকাকে এগিয়ে রাখছি, গর্বিত করছি, আমরা সবই করছি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্যে।১৫ জানুয়ারি স্পেসএক্স-এর ফ্যালকন ৯ রকেটে করে ফ্লোরিডা থেকে চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ব্লু ঘোস্ট।
সঙ্গে বহন করে নিয়ে যায় নাসার ১০টি গবেষণামূলক যন্ত্রপাতি। এরমধ্যে রয়েছে চাঁদের ধুলো সংগ্রহের জন্য একটি ভ্যাকুয়াম যন্ত্র, চন্দ্রপৃষ্ঠের ১০ ফুট নীচের তাপমাত্রা পরীক্ষার জন্য ছিদ্র করার একটি যন্ত্র।
একটি কম্প্যাক্ট গাড়ির সমান আকারের চার পায়ের চন্দ্রযানটি ২৮ লক্ষ মাইল পাড়ি দিয়ে চাঁদের বুকে পৌঁছায়। যাত্রাপথে অসাধারণ কিছু ছবিও তোলে। সব ঠিক থাকলে ১৪ মার্চ চাঁদের বুকে পূর্ণগ্রাস গ্রহনের হাই-ডেফিনিশন চিত্র ধারণ করবে ব্লু ঘোস্ট।
১৬ মার্চ ধারণ করে চাঁদের বুকে সূর্যাস্তের চিত্র, যার মাধ্যমে সৌরশক্তির প্রভাবে চন্দ্রপৃষ্ঠের ধুলো কীভাবে উড়ে সে বিষয়ে ধারণা পাওয়া চেষ্টা করবেন বিজ্ঞানীরা।গত বছর প্রথম বেসরকারি চন্দ্রযান ইনটুইটিভ মেশিনস এর ওডিসিউস চাঁদে নেমেছিল। যদিও নামার সময় সেটির একটি পা ভেঙে যায়। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তাদের আরেকটি যান চাঁদে নামার কথা রয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে এখন পর্যন্ত পাঁচটি দেশ চাঁদে মহাকাশযান পাঠাতে সফল হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও জাপান।